Sunday, July 21, 2019

ছেলেধরা সন্দেহে এক মায়ের গণপিটুনী এবং বাংলাদেশের কান্না

বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে নজর দিলে একটি বিষয় উপলব্ধি হয় যে, বর্তমান বিশ্বে সমস্যা ব্যাপক কিন্তু সমাধানের পথ অল্প। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের বাংলাদেশেও সমস্যা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সমস্যা এতোটাই প্রকোপ যে এর থেকে বের হওয়ার সমাধান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছে এখান থেকে পরিত্রানের। 

আমার মনে পড়ে, আমি যখন খুবই ছোট ছিলাম ৩-৪ বছর বয়স হবে হয়তোবা; তখন সর্বত্র ছেলেধরা কথাটা ছড়িয়ে পড়ছিলো। আমার বাবা-মা আমাকে যথেষ্ট সাবধান করতো এবং ভয় দেখাতো, আমি যেনো অপরিচিত কারোর সাথে কথা না বলি। রাস্তা দিয়ে কোন প্রাইভেট কার যদি ধীরে ধীরে চলতো তাহলে সেটা ছেলেধরাদেরই গাড়ি ছিলো বলে ভাবতাম। এসব গুজবের সাথে আমি ছোটকাল থেকেই যথেষ্ট পরিচিত। কিন্তু আজ এই বিংশ শতাব্দীতে এসে মনে হচ্ছে আমি সেই নব্বই'র দশকে চলে এসেছি। গতকাল খবরে শুনলাম ছেলেধরা সন্দেহে এক মা কে গণপিটুনী দিয়ে মারা হয়েছে; সেখানে শত-শত লোক উপস্থিত ছিলো কিন্তু গুটি কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল খারাপ লোকদের সিদ্ধান্তে প্রাণ গেলো এক মায়ের। হে উচ্ছৃঙ্খল খারাপ লোক তুই/তোরা কোন চ্যাটের বাল বা তুই/তোরা কোন মহারথী যে তোরা নিরাপরাধ এক মা কে মেরে ফেলেছিস। তোদের কেউ কী দায়িত্ব দিয়েছে ছেলেধরা ধরার? নরম জায়গায় ঠিকই তো আঘাত করতে পারো। যাও না একজন ধর্ষককে গণপিটুনী দিয়ে মার; সেটা তো পারবে না। যে ধর্ষক, আমরা সবাই জানি এবং বুঝি সে ধর্ষন করেছে তবুও পাবলিক তাদের গণপিটুনী দেয় না। আর এক মা, তাকে শুধু সন্দেহের বশে বসে গণপিটুনী দেয়া হয়। এটা কোন ধরনের মানবতা! হ্যা এটাই আমার বাংলাদেশের কান্না। আজ এক মা ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনীতে মারা গেছে, সেই মায়ের স্থানে আমরা যদি নিজ নিজ মাকে বসাই তাহলে আমাদের কেমন অনুভূতি হবে? এটা সবার কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম। 
যদি কেউ পারেন বা যাদের সামর্থ্য আছে এই মায়ের পরিবারের পাশে একটু দাঁড়ান এবং নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করেন। 

No comments:

Post a Comment

কোভিড ১৯ – নোবেল করোনা ভাইরাস এবং বাংলাদেশ

  বর্তমান বিশ্বে সবার মুখে একটাই আতঙ্ক “ নোবেল করোনা ভাইরাস” । সবধরনের মানুষই এই ব্যাপারটা সম্পর্কে অবগত। অত্যন্ত দুঃখের সাথে একটা ...